খুলনার মহেশ্বরপাশা (বনিকপাড়া) এলাকায় একটি পরিবার বাড়ির চার দিকে দেওয়াল দেওয়ায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। পূর্বে তিন দিকে দেওয়াল দেওয়া ছিল। বর্তমানে একমাত্র বাইরে যাওয়ার রাস্তার দিকেও মহেশ্বরপাশা বনিকপাড়া নিউ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় দেওয়াল দিয়ে দেওয়ায় আটকা পড়েছে পরিবারটি।
ভুক্তভোগী আক্তারুননেছা ওই এলাকার মৃত গাজী মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী এবং গোপালগঞ্জ জেলার শহীদ সিপাহী আশরাফ আলী মোল্যার মেঝ বোন ও তার ওয়ারিশ। ভোক্তভোগী বিভিন্ন দপ্তরে অবরুদ্ধ বাড়ি থেকে চলাচলের জন্য রাস্তার আবেদন করেও কোন সুফল মিলছে না।
ভুক্তভোগী আক্তারুননেছা বলেন, বিগত ৫০ বছরের বেশী সময় ধরে আমি মহেশ্বরপাশা (বনিকপাড়া) এলাকায় মহেশ্বরপাশা বনিকপাড়া নিউ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় লাগোয়া বাড়িতে বসবাস করছি। আমার উত্তর, দক্ষিন ও পূর্ব পাশে বিভিন্ন ইমারত/বসতঘর প্রাচীরসহ নির্মিত হয়েছে এবং পশ্চিম পাশে মহেশ্বরপাশা বনিকপাড়া নিউ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। আমার বসত বাড়ি থেকে সরাসরি রাস্তার কোন সংযোগ পথও নেই এবং এতদিন স্কুল প্রাঙ্গন উন্মুক্ত থাকায় আমরা স্কুলের মধ্য দিয়ে স্কুল মাঠের দক্ষিন পাশের সরকারী রাস্তায় চলাচল করতাম। সম্প্রতি স্কুলের প্রাচীর নির্মান শুরু হয়েছে এবং নির্মান সম্পন্ন হলে আমার বাড়ি থেকে বের হওয়ার কোন রাস্তাই আর থাকবে না।
আক্তারুননেছার ছেলে মো. তারিকুল ইসলাম চয়ন বলেন, ১৯৬০ সালে আমরা জমি কিনে বাড়ি তৈরি করে মহেশ্বরপাশা এলাকায় থাকা শুরু করি। স্কুল মাঠের পাশ দিয়ে একটি রাস্তা দিয়ে আমরা মেইন সড়কে যাতায়াত করতাম। সম্প্রতি কোন মাপ ছাড়াই স্কুল কর্তৃপক্ষ সীমানা প্রাচীর তৈরি করা শুরু করেছে। তারা সেই রাস্তাটি স্কুলের সীমানার মধ্যে নিয়ে গেছে। বাড়ি থেকে চলাচলের একটিই রাস্তা ছিল। কিন্তু মহেশ্বরপাশা বনিকপাড়া নিউ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় আমার বাড়ির সামনে দেওয়াল তৈরি করে দেওয়ায় চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আমার বড় বোন উচ্চমাত্রার ডায়বেটিকস ও হার্টের রোগী এবং আমার মা ক্যান্সারের রোগী। কেউ অসুস্থ হলে কোলে করে ডাক্তার খানায় নেওয়ারও কোন অবস্থা নেই।
তিনি আরও বলেন, শহীদ সিপাহী আশরাফ আলী মোল্যা অবিবাহিত ছিলেন যার কারণে তার মুক্তিযোদ্ধার ভাতা আমার মা নিয়ে থাকেন। তিনিই মামার ওয়ারিশ। আমরা মানবিক কারণে হলেও আমাদের জন্য রাস্তা রেখে প্রাচীর নির্মানের দাবি জানাচ্ছি।
স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেলিম আবেদিন বলেন, যে জায়গা দিয়ে স্কুলের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে তার পুরোটাই স্কুলের জমি। স্কুল কর্তৃপক্ষ অন্যের জমির উপর দিয়ে ওয়াল নির্মাণ করছে না।
এভাবে ওয়াল নির্মাণ হলে একটি বাড়ি পুরো অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা চলাচলের পথ রাখার জন্য দাবি করেছে তাদের এবং স্কুলের সম্পত্তি এখন অর্পিত সম্পত্তি। ফলে বদলের মাধ্যমেও যদি পথ রাখার সুযোগ থাকতো তাহলে আমরা তাই রাখতাম। যেহেতু উভয়-সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকানাধীন নয় সেহেতু এখানে আমাদের করার কিছু নেই। তারপরও একটি বাড়ির লোকজন যেহেতু অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমরা এলাকার সকলে বসে কি করা যায় সেটি আলোচনা করবো।
এ বিষয়ে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ বলেন, স্কুলে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের বিষয়টি জানেন পরিচালনা পর্ষদের নেতৃবৃন্দ। আমরা শুধুমাত্র দেখভাল করে থাকি। জায়গা জমি নিয়ে কারো সাথে বিরোধ থাকলে সেটি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ জানেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।